শুরু থেকে শূন্য
লেখক: সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী
শিল্পী: টিম কল্পবিশ্ব
২১০০ খ্রিস্টাব্দ। চার আলোকবর্ষ দূরের প্রক্সিমা সেন্টাউরি নক্ষত্রের প্রক্সিমা বি গ্রহে এখন হ্যাবিটেবল জোন বা বসবাসযোগ্য স্থান রয়েছে। সেখানকার মাটি পাথুরে। কৃত্রিমভাবে জল আর বায়োস্ফিয়ার বানিয়ে বাতাসে অক্সিজেন তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। গাছ লাগানো হচ্ছে, তারা নাইট্রোজেন সার মাটি থেকেই আহরণ করছে। বিরাট কর্মযজ্ঞ। পৃথিবী থেকে বিজ্ঞানীরা ঘনঘন যাতায়াত করছেন। সদ্য একটা নভোযান সেখান থেকে এসে নেমেছে মঙ্গল গ্রহের মহাকাশ বেস স্টেশনে। কিছু রসদ নিয়ে আবার ফিরবে শিগগির।
বিশালাকার নভোযানটা তিমিরের ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিল। তার তীক্ষ্ণ অগ্রভাগ কালো আকাশের কোটি কোটি জ্বলন্ত তারার দিকে মুখিয়ে আছে। যেন ওখানেই অপেক্ষা করে আছে মানবজাতির পরবর্তী আদর্শ উপনিবেশের ঠিকানা। এসব কথা ভাবলেই যে কারও মনে রোমাঞ্চ জাগবে, কিন্তু তিমির যেন এসবের থেকে অনেকটা দূরে। কিছুটা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে নভোশ্চরের পোশাক পরে সে মঙ্গলের স্পেস স্টেশন লাগোয়া আলো ঝলমলে লাউঞ্জ ছাড়িয়ে বাইরের গুমটি খাবারের দোকানগুলোর দিকে পা বাড়াল। এখানে কিছু স্থানীয় মানুষদের ভিড়। যাদের প্রক্সিমা বি’তে যাওয়ার সামর্থ্য বা যোগ্যতা নেই। অথবা পৃথিবী থেকে কোনও কারণে বিতাড়িত; বা এমন কেউ যাদের আর কোথাও যাওয়ার নেই। পৃথিবীর নভোশ্চর দেখলে তারা বেশ সমীহই করে। নাসা’র লোগো বসানো ঝকমকে পোশাক আর ভারী ধাতব জুতো পরে কেউ যখন গটমটিয়ে যায়, তার দিকে অবাক হয়ে তাকায় ওরা। প্রয়োজনীয় রসদ, জ্বালানি ভরে নিয়ে আবার মহাকাশে যাত্রা করতে রকেটটার এখনও ঘণ্টা তিনেক দেরি আছে। তিমির সময়ের হিসেব কষতে কষতে এগিয়ে যায় একটা ছোট্ট রেস্তরাঁর দিকে।
তার দিকে চেয়ে থাকা চোখগুলো যখন মুগ্ধ বিস্ময় আর সমীহ নিয়ে তাকাচ্ছিল, তিমির যেন মদ্যপানের নেশার মতো আমেজ টের পাচ্ছিল ভিতরে ভিতরে। সে আড়চোখে সেইসব লোকের মুখ দেখছিল। ঠিক তখনই যেন নেশাটার তাল কাটল। বসে থাকা লোকগুলোর মধ্যে দূরের এক কোণে আলাদা বসা একটা লোকের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে সে বলল, ‘আরে, আলোক না?’ সঙ্গে সঙ্গে বাকি লোকেদের দৃষ্টিও সেদিকে ঘুরে গেল। ‘আপনি ওকে চেনেন?’ কাছের টেবিলে বসা বয়স্ক লোকটা তিমিরকে শুধাল। তিমির কী বলবে ভেবে পেল না। আস্তে আস্তে হ্যাঁ-সূচক ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল। লোকটা বলে চলল, ‘বেচারা আলোক। কতদিন হয়ে গেল ওকে এখানে ফেলে রেখে গেছে “আকাশরানি”, পৃথিবীর মহাকাশযান। যাদের যাত্রার শুরু থাকে, ফেরা থাকে না; এও সেই হতভাগ্যদের একজন। ওর মহাকাশ-ফ্লু হয়েছিল, সেই ছোঁয়াচে রোগটা…’ লোকটা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল। সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে তিমির এগিয়ে গেল পিছনের ওই টেবিলের দিকে। ওখানে যে বসে আছে, সেই আলোক যে তার একমাত্র ভাই! ‘আলোক, আমি কি এখানে একটু বসতে পারি? আপত্তি নেই তো?’
‘আপত্তি আমি করার কে? তা ছাড়া আপনি যে বসবেন, আপনার সংক্রমণের ভয় নেই? আমার কিন্তু মহাকাশ-ফ্লু…’
‘আমি শুনেছি। কিন্তু এতে তোমার তো কোনও হাত নেই। মহাকাশে, বিভিন্ন গ্রহে গেলে তো এটা যে কারোরই হতে পারে যে কোনও সময়। অত ভয় পেয়ে কী লাভ?’
তিমির দেখল, আলোক তাকে চিনতে তো পারেইনি, সে যে তার নাম ধরে ডেকে বা ‘তুমি’ সম্বোধনে কথা বলছে, এতেও বিন্দুমাত্র অবাক হয়নি সে। আলোক যেন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে। তার সামনে টেবিলে সস্তার মদ এক পেয়ালা।
‘আমিও ভয় পাইনি, জানেন? আমি শুধু ভাবতাম দাদা আমাকে এই অবস্থায় দেখলে কী ভাবত? আচ্ছা, আপনি তো নভোশ্চর, হয়তো আপনিও আমার দাদাকে চিনতে পারেন, তাই না? আমি অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, কেউই ওর সন্ধান দিতে পারেনি, আসলে কেউ তো আমার সঙ্গে কথাই বলতে চায় না; ভয়ে। যদিও এখন আমার কোনও সমস্যা নেই শরীরে। কিন্তু ভিতরে ভাইরাসটা থাকতেও পারে, সেইজন্য। আমার দাদার নাম তিমির, তিমির বিশ্বাস। আমার আইডল ও, জানেন?’
‘ন্-না, আমি ঠিক চিনি না। তবে তুমি বলো, ওর সম্বন্ধে কিছু বলতে চাইলে আমাকে বলতে পার নির্দ্বিধায়। আমি শ্রোতা হিসেবে খারাপ নই।’ তিমির মিথ্যেটা বলতে গিয়ে একবার ঢোঁক গিলল।
‘আপনাকে বলব? হ্যাঁ, তা বলতেই পারি। আমার কথা তো কেউ আজকাল শুনতেও আসে না। শুনবেই বা কেন? আমি তো একজন ব্যর্থ মানুষ। একজন অপদার্থ। আমার কথা শোনা মানেই তো সময় নষ্ট, মেজাজ খারাপ করা। তাও আপনি যখন বলছেন… শুনুন, আমার দাদা না একজন সত্যিকারের নায়ক। আমার চেয়ে দশ বছরের বড়। আমার যখন মাত্র বারো বছর বয়স, তখন ও প্রক্সিমা সেন্টাউরিতে গেছিল, নাসার হয়ে। এখন আমার চব্বিশ, ওর পৃথিবীতে ফেরার সময় হয়ে এসেছে প্রায়। হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যেই ফিরবে। কিন্তু আমি তো আর ফিরব না, এখানেই কাটাতে হবে হয়তো আজীবন।’
তিমিরের মনে পড়ে বারো বছর আগের একটা দিনের কথা, মায়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছোট্ট আলোক। তিমির সবকিছু গুছিয়ে মহাকাশযাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়ে বেরচ্ছে। মা’র চোখের কোণে জল। ভাইয়ের চোখে গর্ব আর বিস্ময়। তিমির বলছে, ‘মা, ভাইকে সাবধানে রেখো। আর আমার কিন্তু ফিরতে দেরি হবে, তুমি তো জানোই, তবে ফিরব অবশ্যই। আমায় ভুলে যেও না যেন, হা হা!’
তিমির যখন তার ছোট থেকে লালিত স্বপ্নটাকে সত্যি হতে দেখছে, তার প্রথম মহাকাশ উড়ান বাস্তবায়িত হচ্ছে, পৃথিবীর মাটির মায়া কাটিয়ে সে দূরে, আরও দূরে চলে যাচ্ছে, তার ভাই আলোক সেদিনই মনে মনে তাকে নিজের আদর্শ মেনে নিয়েছিল। সেও ভেবেছিল বড় হয়ে দাদার মতোই মহাকাশযাত্রী হবে একদিন। কিন্তু সেসব কতদিন আগের কথা, কত বছর, কত বিস্তৃত আকাশপথ পিছনে ফেলে এসেছে সেসব দুই ভাই।
‘সেদিনই, দাদার ওই যাওয়ার দিনেই আমি ঠিক করেছিলাম বড় হয়ে ওর মতো হব, জানেন? মাথায় যেন মহাকাশযাত্রার ভূত চেপেছিল আমার। আর সেটা করেও ছাড়লাম আমি একদিন। নির্দিষ্ট পরীক্ষা সব পাশ করে নাসার ট্রেনিং একাডেমিতে ভর্তি হলাম আমি। সব কিছুই বেশ সহজেই হয়ে যাচ্ছিল। প্রশিক্ষণের সময় তীব্রগতিতে ঘুরতে থাকা সেন্ট্রিফিউজের মধ্যে যখন পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণের দশ-বারো গুন টান অনুভব করছিলাম, আমার শরীর মন সব শিহরিত হচ্ছিল উত্তেজনায়। অনেকে এত ত্বরণে ঘুরতে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে, বমি-টমি করে ফেলে, কিন্তু আমার সেসব কিচ্ছুটি হয়নি জানেন? ট্রেনাররা সবাই প্রশংসা করত আমার। তারপর অল্টিচিউড চেম্বারে ঢোকানো হল আমায়। মাটি থেকে ছাব্বিশ-সাতাশ হাজার ফুটে যতটা অক্সিজেন থাকে, সেটুকুর মধ্যেও আমি দমের কোনও ঘাটতি অনুভব করিনি। অবশ্য আপনি তো নিজেও একজন নভোশ্চর, আপনি বুঝবেন নিশ্চয়ই। কী হাস্যকর ব্যাপার, না, আপনাকে এত কিছু বলছে আমার মতো একজন ব্যর্থ লোক…’
‘আমি একটুও হাসছি না আলোক, তুমি বলে যাও। তারপর কী হল?’
‘প্রথম প্রথম আমি তো বেশ মজাতেই ছিলাম। একটা করে কঠিন পরীক্ষায় উতরে যেতাম আর ভাবতাম আমার দাদা এ কথা জানলে না জানি কী খুশিই হবে! তারপর একদিন সেইদিন এল। বছর চারেক আগে, যখন আমাকে নিয়ে নাসার একটা স্পেসক্র্যাফট মাটি ছেড়ে মহাশূন্যে উড়ল। মা সেদিনও ঠিক আগের মতোই সবটা দেখেছিল দূরে দাঁড়িয়ে, যেমন নিজের বড়ছেলেকে যেতে দেখেছিল।
তারপরেই ঘটল ঘটনাটা। আমাদের যানের গতি যেই বাড়ল, থরথর করে কেঁপে জোরে আরও জোরে সেটা এগোতে থাকল, আমি হঠাৎ অনুভব করলাম চারপাশের সব শব্দ থেমে গেছে। পৃথিবীর সব কোলাহল থেকে বহুদূরে আমরা। অস্বস্তিকর এক নিস্তব্ধতা। আমি অস্ফুটে বললাম, ‘কী চুপচাপ সব! এত চুপচাপ কেন…’ আমার সঙ্গীরা আমার চেয়ে অভিজ্ঞ ছিল। তারা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল কিছু একটা গোলমাল হচ্ছে। আমি যেন নিজের আসনে বসে কেমন জবুথবু মেরে যাচ্ছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার সিটের সঙ্গে বাঁধা স্ট্র্যাপ খুলে তারা আমায় মুক্ত করে। তখন যানের ভিতর ভারশূন্য অবস্থা। বাঁধন খুলে দিতেই আমি শূন্যে উঠে গেলাম। দু’পাশ থেকে দুজন সহকর্মী আমায় চেপে ধরল, তারাও শূন্যে ভাসছে। ওরা আমায় বলছিল এই চমৎকার অভিজ্ঞতাটা উপভোগ করতে। আগে তো ট্রেনিং সেন্টারে আমার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে, তখন মজাই পেয়েছিলাম, কিন্তু ওই সময়ে আমার যেন কিছুই ভালো লাগছিল না। কেমন একটা আতঙ্ক আর বিষাদ একসঙ্গে চেপে বসছিল আমার উপর। মহাশূন্যের আতঙ্ক। কী লজ্জার কথা! তিমির বিশ্বাসের ভাই হয়ে এই অবস্থা আমার! আমি ওদের হাতের মধ্যে থেকেই ছটফট করে একগুঁয়ে বাচ্চাদের মতো বলছিলাম, ‘আমায় ছেড়ে দাও। আমি বাড়ি ফিরব। যান ঘোরাও। ঘোরাও বলছি।’ কিছুতেই আমাকে সামলাতে না পেরে শেষে নাকি আমাকে ইঞ্জেকশন পুশ করে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল ওরা। আমি নাকি কাঁদছিলাম পাগলের মতো। তারপর আমার যখন হুঁশ ফিরল, দেখলাম আমি এই মঙ্গলগ্রহের এই মহাকাশ বেস স্টেশনের একটা হাসপাতালের বেডে শুয়ে। যান আমাকে এখানে নামিয়ে তার গন্তব্যে চলে গেছে। আমার মতো ঝঞ্ঝাটকে বয়ে দূর গ্রহে যাওয়ার মতো বোকামি তারা করেনি। তবে সেইসঙ্গে আরেকটা কথা জানিয়ে গেছে এখানকার দায়িত্বে থাকা লোকেদের। আমার নাকি ছোঁয়াচে স্পেস-ফ্লু হয়েছিল। তাই বাধ্য হয়ে এখানে রেখে গেছে ওরা। দু’মাস পর্যবেক্ষণে রাখবে। তারপরে অন্য একটা মহাকাশফেরি এসে আমাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। পৃথিবীতে! মানে আবার সেই মহাকাশযানে চাপা, ওই নিঃসীম শূন্যতার মধ্যে থাকা। আমার— আমার কেমন একটা ভয় ঢুকে গেছিল মনের মধ্যে। মহাকাশ যেন আমাকে গিলে খেতে আসছে। একজন মহাকাশচারীর পক্ষে এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। তাই আমি ওই ফ্লু এর অজুহাতটাই দিতে চাইলাম। বললাম নিজেকে এখনও যথেষ্ট সুস্থ মনে করছি না, দুর্বল লাগছে ভিতরে ভিতরে। মহাকাশযাত্রার আগে ফিটনেস টেস্টে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হলাম পরপর কয়েকবার। তারপর ওরাও হাল ছেড়ে দিল। আমি একটা ‘লস্ট কেস’ হয়ে পড়ে রইলাম এখানে। এখানেই মানিয়ে নিলাম।’
‘ঠিকই করেছ, আমি বলব। মঙ্গল হয়তো পৃথিবী নয়, তবু ছোটখাটো কাজ করে পেট চালানোই যায়। এই মহাকাশ স্টেশনের এলাকায় বায়োস্ফিয়ারও রয়েছে এখন। বেঁচে থাকাটা একঘেয়ে, নিরুত্তাপ হলেও অন্তত নিশ্চিন্ত।’ তিমির যেন প্রবোধ দিতে চায় তার ভাইকে।
‘আমাকে এবার উঠতে হবে আলোক, আমার যাওয়ার সময় হল। তোমার কথা তো সবই শুনলাম, তবু আরেকবার অনুরোধ করছি, একবার কি বাড়ি ফেরার জন্য চেষ্টা করে দেখবে? মনকে প্রস্তুত করতে পারবে?’
তিমিরের কথায় আলোক আবেগে বিহ্বল হয়ে বলে, ‘জানি না আপনি আমার জন্য এত ভাবছেন কেন, এভাবে কেউ কখনও বলেনি আমাকে… তবে বলছেন যখন আমি একবার চেষ্টা করে দেখতে পারি। বিদায়, ভালো থাকবেন।’
চোখের জল সামলে দ্রুতপায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে তিমির। রকেট ছাড়ার সময় হয়ে এল। পোর্টে ঢুকতেই একজন সিনিয়র কর্তা ধমকের সুরে তাকে বললেন, ‘এতক্ষণ কোথায় ছিলে? আবার ওইসব পোশাক পরে বেরিয়েছ? যাও নিজের ইউনিফর্ম পরে রেডি হও!’
‘ইয়েস স্যার।’ বলে মাথা নামিয়ে পোর্টের এক কোণায় নিজের ছোট্ট কুঠুরিতে ঢুকে মহাকাশচারীর পোশাক ছেড়ে ফেলে সে। উৎক্ষেপণ-অবতরণ কেন্দ্রের নিরাপত্তারক্ষীর ইউনিফর্ম পরে নেয় তড়িঘড়ি। হ্যাঁ এটাই তার বরাদ্দ পোশাক। এই কাজই করে সে এখানে।
‘আমি কি একটু আগে নভোচারীদের পোশাক পরে কাউকে এদিকে আসতে দেখলাম? আমাদের যানের কেউ কি…?’ প্রক্সিমা বি’র উদ্দেশে যানটা রওনা হওয়ার আগে শেষবার চেকিং করতে গিয়ে যানের ক্যাপ্টেন প্রশ্ন করলেন পোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে।
তিনি হেসে মাথা নেড়ে বললেন, ‘না স্যার। ওর নাম তিমির, তিমির বিশ্বাস। আমাদের এখানে সিকিউরিটির কাজ করে। ভালো ছেলে। তবে একটু সমস্যা আছে। আগে একসময় ও মহাকাশযাত্রায় যেত। কয়েক বছর আগে একবার হঠাৎ করেই ওর কিছু মানসিক অসুবিধা দেখা দেয়। মহাকাশের শূন্যতায় ভয় পেত। অসংলগ্ন আচরণ করত। ওর সহকর্মীদের খুব সমস্যা হচ্ছিল। কমপ্লেইন করেছিল ওর নামে। তারপর একটা যান ওকে এখানে নামিয়ে দিয়ে যায়। বেচারা পৃথিবীতে ফিরতেও লজ্জা পায়। ওর পরিবার, বন্ধুরা জানলে হাসাহাসি করবে নাকি। তাই। এখানেই কাজ করে, আর মাঝে মাঝে ওর পুরোনো স্পেস স্যুটটা পরে এদিক ওদিক টহল দেয়। মাথায় হেলমেট থাকে বলে কেউ খুব একটা চিনতেও পারে না এখানে। যাক গে, ওকে নিয়ে ভাববেন না। আপনারা এগোন স্যার। ফ্লাইটের সময় হয়ে এল।’
Tags: কল্পবিজ্ঞান গল্প, ষষ্ঠ বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী