রূপান্তর
প্রতিটি রাতে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে, রিনা রেফ্রিজারেটরগুলোকে পরীক্ষা করতে ভুলত না।
রান্নাঘরে দুটো রেফ্রিজারেটর রয়েছে। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা সার্কিটের সঙ্গে যুক্ত। ওদের একটার দরজায় আবার সুদৃশ্য ‘আইস ডিস্পেন্সার’ আছে। বসার ঘরেও একখানা রেফ্রিজারেটর আছে, টিভিটা তার ওপরে বসানো। আরও একটা সাজানো আছে শোওয়ার ঘরে- ওটা ব্যবহৃত হয় নাইটস্ট্যান্ড [আরো পড়ুন]
Read More
শিস
১
“এই দুলজোড়া আমার খুবই পছন্দ হয়েছে, থ্যাংক্স কিনে দেওয়ার জন্য,” আহ্লাদি গলায় পাবলোকে বলল পুষ্পিতা।
“আমাদের টাক্সকো তো বিখ্যাতই রূপার জন্য। এই অঞ্চলকে স্প্যানিশরা কী নাম দিয়েছিল জানো? সিলভার সিটি। এখনো ওই নামই বহাল আছে, শুধু মেক্সিকো নয়, গোটা পৃথিবী থেকেই রূপাপ্রেমীরা এই শহরে আসে,” হাসল পাবলো।
“যাক, তোমাকে বিয়ে করে এই একটা লাভ তো হল, রূপার শহরের বউ হলাম।”
Read More
ভূতগুলো সব বাঁশি বাজায়
“শুনতে পাচ্ছ?” মণির জিজ্ঞাসা।
আমি হাঁটা থামালাম।
আমাদের চারিদিকে গাছ আর গাছ। বাঁশ, ওক, ম্যাপল, ফার। মাঝে মাঝে রক্তাভ রডোডেনড্রন। সভ্যতা এই উপত্যকাকে চেনে না, জানে না। মহাদ্রুমদের শাখা-প্রশাখায় আটকে গিয়েছে সময়ের নিশ্চিত স্রোত। হাওয়ার আদরে পাতাদের শিরশির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে পাখির ডাক। সেই ডাকের সঙ্গে মিশে রয়েছে বাঁশির আওয়াজ।
Read More
শ্যাডোজ ইন দ্য মুনলাইট
১
নলখাগড়ার বনে ধাবমান ঘোড়ার খুরের শব্দ শুনতে পাওয়া গেল। তারপরেই ভারী পতনের ধ্বনি। তার রেশ মিলিয়ে যাবার আগেই একটা হতাশ ও মরিয়া চিৎকার। মৃত্যুপথযাত্রী চতুষ্পদ প্রাণীটা ছটফট করছিল। তার ভারী শরীর থেকে নিজেকে মুক্ত করে উঠে দাঁড়াল অশ্বারোহী। তন্বী যুবতী। পাদুকামোড়া চরণ দু-খানি, পরনে পশমি অঙ্গরক্ষা। কৃষ্ণভ্রমর চুলের রাশি তার শ্বেতবর্ণ [আরো পড়ুন]
Read More
ষষ্ঠ বর্ষ প্রথম সংখ্যা
ষষ্ঠ বর্ষ প্রথম সংখ্যা – ক্যারেল চ্যাপেকের ইউ আর আর এবং আইজ্যাক আসিমভের জন্মশতবার্ষিকী বিশেষ সংখ্যা
প্রকাশকাল – ১ মে ২০২১
অসামান্য প্রচ্ছদটি এঁকে সংখ্যাটিকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তুলেছেন শ্রীমান রনিন।
Read More
রোজামের যন্ত্রদাস
Domin: (Smile) Now, the thing was how to get the life out of the test tubes, and hasten development and form organs, bones and nerves, and so on, and find such substances as catalytics, enzymes, hormones in short – you understand?
Helena: Not much, I’m afraid.
Domin: Never mind. (Leans over couch and fixes cushion for her back) There! You see with the help of his tinctures he could make whatever he wanted. He could have produced a Medusa with the brain of Socrates or a worm fifty yards long— (She laughs. He does also; leans closer on couch, then straightens up again) —but being without a grain of humor, he took into his head to make a vertebrate or perhaps a man. This artificial living matter of his had a raging thirst for life. It didn’t mind being sown or mixed together. That couldn’t be done with natural albumen. And that’s how he set about it.
Helena: About what?
Domin: [আরো পড়ুন]
Read More
নক্ষত্রমাতা
সেই রাতে তাঁর ছেলেই ছিল প্রথম নক্ষত্র।
সেই চৈত্র রাতে তিনি একটা হাত বুকে রেখে, একা, তাঁর বাড়ির বাগানে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন— সামনের মাঠটা থেকে তাঁর ছেলে দক্ষিণের আকাশে উঠে গেল— উঁচু আরও উঁচুতে উঠতে উঠতে একেবারে আকাশের মাথায় পৌঁছে সে নামতে থাকল। নামতে নামতে শেষে উত্তর দিগন্তের কালো অন্ধকারে হারিয়ে গেল— তাকে আর দেখা গেল না। আচ্ছা, সে কি এখন [আরো পড়ুন]
Read More
অনুভূতিদের শীর্ষবিন্দু
হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় শান্তনুর, প্রায় অন্ধকার কম্পার্টমেন্ট, শীতের রাত, সকলেই প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে, শুধু একটানা ট্রেনের শব্দ আর ঝাঁকুনি, বাথরুমের কাছে হলুদ আলোটা জ্বলছে, ঘুম চোখে সেই আবছা আলোয় সবকিছু কেমন মায়াবী লাগে শান্তনুর।
সর্বোচ্চ গতিতে ট্রেনটা ছুটছে, শান্তনুর মনে পরে সে যখন ঘুমিয়েছিল তখন ট্রেনটা দাঁড়িয়েছিল। কটা [আরো পড়ুন]
Read More
ইউটোপিয়া
গভীর রাত।
শহরের প্রধান টাওয়ার ডিজিটাল ক্লকে রাত দুটোর ডিজিট শো করছে লাল দপদপে আলোয়।
সারা শহর নিস্তব্ধ হয়ে আছে। প্রতিটি মানুষ এখন গাঢ় নিদ্রায় আচ্ছন্ন। কুকুরগুলোও এই প্রচণ্ড ঠান্ডায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। শুধু হ্যালোজেন বাতিরা হলুদ আলো বর্ষণ করে যাচ্ছে অবিরাম। কুয়াশা থাকায় আরও রহস্যময় লাগছে আলোগুলো।
ঠিক এই সময় কুয়াশার চাদর [আরো পড়ুন]
Read More
ডাইন
বড়দিনের ছুটিতে কোথাও বেড়াতে যাবার প্রস্তাবটা রক্তিমের। প্রস্তাবটা পাওয়া মাত্র অদ্রিজা লুফে নিল। ঘাটশিলায় ওদের পৈত্রিক বাড়িটা এখন ফাঁকাই পড়ে থাকে। ঠিক হল, ওই বাড়িতেই দিন দুয়েক থাকা যাবে। শুক্রবার ওরা চারজন রক্তিম, জয়ন্ত, সৌমী আর অদ্রিজা রওনা দিল ঘাটশিলার উদ্দেশে।
ঘাটশিলা স্টেশনে যখন নামল তখন বিকাল। পশ্চিমদিগন্তে লাল বলের মতো [আরো পড়ুন]
Read More
দেবশিশু
সাল ২১৩৯, হিউম্যান রিপ্রোডাকশন অ্যান্ড নারচারিং সেন্টার (এইচ আর এন সি), মিরশা সিটি
“মিস্টার অ্যান্ড মিসেস টি৯ ইউ ভি, আজকে আপনাদের এই বোর্ডের সামনে কেন উপস্থিত হতে বলা হয়েছে সে সম্বন্ধে আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন। তাও প্রোটোকলের স্বার্থে আমি গোটা বিষয়টা সংক্ষেপে এই বোর্ডের সামনে তুলে ধরছি।
“মিস্টার অ্যান্ড মিসেস টি৯ ইউ ভি আপনারা দুজন [আরো পড়ুন]
Read More
নিঃশব্দ
ঘুমিয়ে পড়েছে সুমিত। বাইরে বেরিয়ে হাঁটুর সমান উচ্চতার পাহাড়ি পাথরটার উপর বসে পড়ল প্রজ্ঞা। বাড়ির শেষ মাথায় বাগানের মধ্যে রাখা আছে পাথরখানা। এর পরেই শুরু হয়েছে খাদ। খাদের ওপারে সবুজ উপত্যকা। শীতকালে বরফের পুরু চাদরে ঢেকে যায় গোটা জায়গাটা। বর্ষাকালে উপত্যকার মাথায় মেঘ জমে বৃষ্টি নামলে ছোট্ট জায়গাটা হয়ে ওঠে এক টুকরো ল্যান্ডস্কেপ।
Read More
সাদা জাহাজ
আমি বেসিল এলটন। আমি নর্থ পয়েন্টের বাতিঘরের বাতিওয়ালা। আমার আগে আমার বাবা, আমার ঠাকুর্দা সকলেই এইখানে বাতিওয়ালা ছিলেন। পাড় থেকে অনেকটা ভেতরে পিছল পাথরের বুকে ধূসর বাতিঘরটা একলা দাঁড়িয়ে থাকে। পাথরগুলো জোয়ার এলে জলে ডুবে যায়। ভাটার সময় নজরে পড়ে। বাতিঘরের পেছনে ছড়িয়ে থাকা সমুদ্রের বুকে সাত সাগরের তিন মাস্তুলের পালতোলা [আরো পড়ুন]
Read More
বাতাসে বিনাশ বার্তা
টেবিলের ওপর সাজান সিদ্ধ ভাতের তৈরি সাদা, শাঙ্কব পাহাড়ের সারি; কলা পাতায় উৎসর্গ করা চাল, পাখির ডিম, বিভিন্ন ফলমূল, ছত্রাক। আজ রিনচেনদের বাড়িতে পুজো, লেপচা ভাষায় ‘রাম ফাট্’। প্রাচীন মুন ধর্মবিধি মেনে উপাসক সিমিক বংথিং এবং উপাসিকা রেণু মুন সামান্য ‘চি’ পান করে পুজোয় বসেছেন। সকাল থেকেই কুয়াশার ধুসর পর্দায় মুখ ঢেকেছে গ্রামের [আরো পড়ুন]
Read More
সময়নদীর বাঁকবদল
(এটা একটা বিকল্প ইতিহাসের কাহিনি। বাংলায় অল্টারনেট হিস্ট্রির ধারাটি নতুন। এই কাহিনিকে একটি জিও-পলিটিক্যাল কমেন্ট্রি বলা যায়। এই ধারাভাষ্য সম্পূর্ণ কাল্পনিক, অন্তত এই বিশ্বে। কোনও সমান্তরাল বিশ্বে সত্যিও হতে পারে।)
প্রাককথন
২১২০ সাল, কলকাতা
অফিসের বায়োমেট্রিক গেটে বুড়ো আঙুল ছুঁয়ে লোকটা ভিতরে ঢুকতেই [আরো পড়ুন]
Read More
অযান্ত্রিক
অন্ধকার রাতে কেউ নেই পথে। মশালগুলো হাওয়ার সঙ্গে যুঝে উঠতে পারছে না কিছুতেই। আগুনের শিখাগুলো ভূমধ্যসাগরীয় হাওয়ার দাপটে বিদ্রোহী চাষীদের মতন কাঁধ নুইঁয়ে অস্তিত্বের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কুকুরগুলো কোনও এক কোনে গলা মিলিয়ে কান্না জুড়েছে। একাকী পথে কাঁপতে কাঁপতে পথ চলেছে মাঝবয়েসী ইয়াসোনাস। বাপ-মা ভেবেছিল ছেলে বড় [আরো পড়ুন]
Read More
লম্বগলি
“এ কোন রাস্তায় নিয়ে এলি?”
“কেন মোড়ের মাথায় ও-ই তো বলল বাঁ দিকের রাস্তায় যেতে।”
“ও বলল আর তুই চলে এলি? এটা তো সেই কুড়গুড্ডা পাহাড়ের রাস্তা মনে হচ্ছে।”
যে মোড়ের মাথায় বাঁ দিকে যেতে বলেছিল সে রুখে উঠল। “কেন কুড়গুড্ডার রাস্তা কি রাস্তা নয়? তোরাই তো বললি চটপট বাড়ি ফিরতে হবে। এ রাস্তাটা অনেক ছোট।”
“ছোট তো বটে, কিন্তু বিপদের কথাটা ভাববি না?”
Read More
ডিলিট
গাড়িটাকে কার পার্কে রেখে ব্যাকভিউ মিরারে নিজেকে একবার দেখে নিল জুলেখা। কপালে ঝুলন্ত চুলের গোছাকে একটু ছড়িয়ে রুমাল দিয়ে চোখের পাতা আর গাল একবার আলতো করে মুছে গাড়ি থেকে নেমে পড়ল সে। রনি ওর কপালের ছড়ানো চুল নিজের হাতে সরিয়ে দিতে পছন্দ করে। বেশ কয়েকমাস আগে সে ওর অগোছালো চুল দেখে মন্তব্য করেছিল ‘কেয়ারলেস বিউটি’। কথাটা ক্লিশে হলেও মনে রয়ে গেছে জুলেখার।
Read More
ধূসর রঙিন
অনুরাগের ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেল একটা দুঃস্বপ্নে। এই রোজকার অফিসের ইঁদুর-দৌড়, যানজট, ধুলো কাদা আর সবচেয়ে বড় কথা তার নিঃসঙ্গ জীবনের বাকি দিনগুলোর এই একঘেয়েমি সিলেবাস। মৃত্যুও তো একটা পরীক্ষাই, মুক্তি পাওয়ার! চাইলেও সবাই পারে না।
এই এক বছরে যেন তার জীবন থেকে সব রং, মুছে গিয়েছে ধীরে ধীরে, কালকের সেই গোধূলির ম্লান আলোটার মতোই।
কাল বিকেলে [আরো পড়ুন]
Read More
সমুদ্রের গুপ্তকথা
কি বলছ জেঠু সমুদ্রের নীচে নদী?” শাওন অবাক!
সবাই বসেছে বিখ্যাত ওসানোলজিস্ট শঙ্কর সেনগুপ্তকে ঘিরে। তিতিরের জ্যেঠু উনি। বিয়েসাদি করেননি। মাঝে মাঝে ছুটি কাটাতে আসেন ভাইয়ের বাড়িতে। তখনই তিতির আর ওর বন্ধুদের জমায়েত হয় গল্পের আশায়। তিতিরের বাড়ির সবাই খুব ফ্রি। জমিয়ে আড্ডায় তাই কোনও কিছু বাধা নিষেধ নেই। সবাই “বুড়ো সাধু” নিয়ে বসেছে গলায় ঢালবে বলে।
Read More
একটি মথের মৃত্যু
১. ‘Don’t clap too hard- It’s a very old building.’
‘সভ্যতা যখন ঘুমিয়ে ছিল, আমরা প্রকৃতিকে মায়ের রূপে পুজো করতাম। পশু থেকে মানুষ হবার তাড়নায় এক সময় আমরা মাকে ভুললাম। যে সবুজে আমাদের শান্তি ছিল তাকেই দু-হাতে ছিঁড়েখুঁড়ে একসময় এই হৃদয়হীন ধূসর শহরের জন্ম দিলাম আমরা। সেই শহর আজ নখ-দাঁতে গিলে নিচ্ছে আমাদের। আমরা বিপন্ন। চারিদিকে শুধু মৃত্যুর সুর বাজছে। মরুভুমি এগিয়ে আসছে, বরফ গলছে, [আরো পড়ুন]
Read More
কর্নেল এবং…
কর্নেল এবং…
লেখক – রনিন
অলংকরণ – সুমিত রায়
১
পথে হলো দেরি
সেদিন ছিল রবিবার। একটা ছিমছাম ভালো লাগার অলস অখন্ড রবিবার। খবরের কাগজে কাজ করার সূত্রে ততদিনে সপ্তাহের বাকি দিনগুলোর সঙ্গে শনি-রবির পার্থক্য ভুলেছিলাম প্রায়, কিন্তু ডাকবাংলোর খুনের কেসটা সমাধান হওয়ার পর থেকে পুরো এক সপ্তাহের ছুটি মনজুর হয়েছে অফিস থেকে। তাই আমার হাতে তখন [আরো পড়ুন]
Read More
২০৩০ : স্বগতোক্তি
ঠকাং… ঠক… ঠকাং… ঠক… ঠকাং…
একটা আশ্চর্য ছন্দ ওই শব্দে। ভয়ানক বিরক্তিকর এবং একঘেয়ে সুর। যেন কোনও বিপদের পূর্বাভাস।
ওরা এসে গেছে। এখানেও। আমার পিছু নিয়ে, আমাকে তাড়া করে। ওদের ধাতব পদশব্দ বলছে ওরা আমায় ছাড়বে না সহজে। প্রতিমুহূর্তে আমার ঘরে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। কিন্তু উপায়?
আচ্ছা, একবার মাথা ঘুরিয়ে দেখে নিই ঠিক কতদূরে [আরো পড়ুন]
Read More