এক ডজন কল্পবিজ্ঞান লিমেরিক
লেখক: অরুণাচল দত্ত চৌধুরী
শিল্পী:
(১)
দূরবীন তাক করে চৈনিক প্রাচীরে
  চাঁদ থেকে দেখি… সেথা আমিও যে আছি রে!
  মনে ওঠে কলরব।
  কী ভাবে তা’ সম্ভব?
  দুই জায়গায়ই থাকা, সময়কে না চিরে?
(২)
বেদ থেকে চুরি করা তথ্যের জোয়ারে
  আইনস্টাইনের খ্যাতি। যাচ্ছে তা’ ছোঁয়া রে।
  প্রমাণ রয়েছে ঢের
  বেদে লেখা সুক্তের
  সাঁটে বলা …ই সমান এম সি স্কোয়ারে।
(৩)
মৎস্য ধরেছি প্রভু, কী খাবেন, ল্যাজা নাকি মুড়ো?
  মহাকাশ থেকে আসা দেবতাকে শুধোলেন খুড়ো
  মহাকাল অতিথিটি
  হাসলেন মিটিমিটি
  ‘খিদে পেলে খাই শুধু দুই মুঠো সময়ের গুঁড়ো।
(৪)
ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ দেখে দারুণ হতাশ ভীষ্ম তো,
  ইচ্ছামৃত্যু নেবার জন্য তির খেয়েছেন বিশ শত।
  শরশয্যায় তৃষ্ণা পেলে
  শীতল সে’জল কোথায় মেলে…
  পার্থ জানেন। আর্টেজিয়ান কূপ ছিল তা’ দৃশ্যত।
(৫)
নীরবে উধাও হতে ছক কষে ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা।
  কারও প্ল্যান ভিন গ্রহ, কেউ ভাঙে সময় আর মাত্রা।
  পলিটিক্সের দাদা
  ভাবে পাবলিক গাধা।
  তা’দের পালাতে দিয়ে… বলে, ‘ইহা স্বচ্ছতা-যাত্রা’।
(৬)
নানা সার্কিট চিপ, ঢেকে রাখে প্লাস্টিক…
  তবু সে’ রোবট প্রভু, ভুলে কেন যাস ঠিক?
  হোমোস্যাপিয়েন্সেরা
  ও’দের চাকর… সেরা।
  কাজে ফাঁকি দিলে বলে, ‘মানুষেরা রাস্টিক’।
(৭)
একটু আগে নামল রকেট, ইউরেনাসের বন্দরে।
  প্রেমিক চালক গন্ধ গোকুল সাজল অনেকক্ষন ধরে
  চক্ষে কাজল বক্ষে ডিও
  দেবার পরেও শুনল, ‘প্রিয়
  তফাত হটো। বাপ রে তোমার গাত্রে বিকট গন্ধ রে!’
(৮)
আবশেষে ইঁদুরের ভারি খুশি হয়ে গেছে মনটা
  বেড়ালের গলায় যে শেষমেশ বাঁধা গেছে ঘণ্টা!
  শুনে ডাক্তার কয়,
  ‘মনে লাগে বড় ভয়,
  আবার বেড়েছে বুঝি এ’ রোগীর হ্যালুসিনেশনটা’।
(৯)
বইমেলাতে আমন্ত্রিত ছদ্মবেশী অ্যালিয়েন
  সবটা দেখে বলে… মশাই কোথায় এনে ফেলেছেন?
  টোটাল সাইজ তো কয়েক টি.বি.
  তার জন্য এই পৃথিবী
  আজও সাজায় এত একর? আদিম প্রাণীর আজব ব্রেন!
(১০)
প্রেমে না পড়েই ওরা খেয়েছিল কিস্ কি?
  ব্যাকরণ মতে সে’টা নিদারুণ রিস্কি।
  মিথ্যা ডিটেক্টর …
  স্কেলার আর ভেক্টর
  মেপে ঝুপে বলে,না হে, ব্যাপারটা ইশক্ই!
(১১)
জোড়াতালি দেহ। অথচ জন্মতারিখ চাইছে আধারে।
  হাত পা লাগানো… বিভিন্ন ডেটে। সেইটেই বড় বাধা রে!
  অন্য অঙ্গ? তা’ও সে’রকম।
  যেমনটি ধরো দারুণ জখম
  হার্টটা বদলে গত বছরেই ফ্রেশ বসিয়েছি বাঁ ধারে।
(১২)
টুনি বালব জ্বেলে জেনো মিটবে না রাত্রির বায়না।
  রকেটে কক্ষপথে তুলে দাও বড় বড় আয়না।
  দেখো বিনা কলরবে,
  আলো প্রতিবিম্বিত হবে।
  বিজ্ঞানী ভাবলেও, নেতাদের সে’টা ভাবা দায় না।
